জাম খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিতভাবে জেনে নিন

জাম খাওয়ার নিয়ম জামের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে হয়তো আপনারা খোঁজাখুজি করে সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। টেনশন এর কোন কারণ নেই। আজকে আমার আর্টিকেলে জামের উপকারিতা ও অপকারিতা গর্ভাবস্থায় জাম খেলে কি হয় বিস্তারিত আলোচনা করব।

মৌসুমী ফলের মধ্যে জাম খুব উপকারী। জাম সাধারণত জুন জুলাই আগস্ট মাসে পাওয়া যায়।বিস্তারিতভাবে জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

ভূমিকা

গ্রীষ্মকালীন সময়ের জাম খুব উপকারী।জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ সি পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম আয়রন ফাইবার বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে বিদ্যমান জাম খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।জাম শুধু সুস্বাদু ফল নয় এর উপকারিতা ও রয়েছে অনেক।
আমার এই আর্টিকেলে জামে উপকারিতা অপকারিতা জাম খাওয়ার নিয়ম এবং উপযুক্ত সময় জামে পুষ্টিগুণ জামের ব্রিজের উপকারিতা ও উপকারিতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি।

গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভবতী মায়ের ও শিশুর জন্য জাম খুব উপকারী ও সুস্বাদু একটি ফল গর্ভকালীন গর্ভবতী মায়েদের জাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকে জানেন না।সেজন্য আজকে আমি এ আর্টিকেলে সমস্ত জামের বিস্তারিত আলোচনা করব।

  • জামে রয়েছে পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম ভিটামিন সি আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।জাম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং হাড়কে অনেক শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
  • জামে রয়েছে আন্টি-অক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকার কারণে গর্ভবতী মায়ের শরীর শক্তিশালী হয় এবং উচ্চ রক্ত সাপের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে সাহায্য করে।
  • জামে রয়েছে ভিটামিন সি সেটা শিশুদের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • জামে মাগনেসিয়াম রয়েছে যা অকাল প্রসব এড়াতে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে।
  • জামে রয়েছে আন্টি ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি দেই গর্ভাবস্থায় জাম খেলে মুখে রুচি বজায় থাকে তাই গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়া অনেক ভালো।
  • জামে ফাইবারে ভালো উৎস পাওয়া যায় জাম হজমে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে প্রতিরোধ করে।
  • গর্ভাবস্থায় নিয়মিত জাম খেলে ইরিটেটেবল-বাওয়েল-সিনড্রোম এর সাথে মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে এছাড়াও পাশাপাশি আলসারের সমস্যা ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে ভালো করতে বেশ সাহায্য করে।

জাম খাওয়ার নিয়ম

আমরা সবাই এই জাম খেতে পছন্দ করি জামে যেরকম উপকার আছে তেমনি জামের অপকারিতা রয়েছে।জাম খাওয়ার আগে কিছু নিয়ম মেনে খেলে উপকারিতা অনেক।জাম খাওয়ার নিয়ম না মেনে লোভে পড়ে জাম বেশি খেলে তার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।জাম খেলে কি হয় আলোচনা করা হলো:-



  1. জাম খেয়ে কখনোই পানি পান করবেন না।পানি খেলে ডায়রিয়া ও বোধহজমের মত সমস্যা হতে পারে জাম খাওয়ার আধা ঘন্টা পর পানি পান করতে হবে।
  2. খালি পেটে জাম খাওয়া যাবে না খালি পেটে জাম খেলে বদহজম বাম বল এর সমস্যা হতে পারে।
  3. জাম খাওয়ার পর দুধ দই খাবার এড়িয়ে চলুন।
  4. জাম খাওয়ার পরে আচার জাতীয় কোন কিছু না খাওয়াই ভালো। জাম খাওয়ার
  5. জাম খাওয়ার পর হলুদ জাতীয় খাবার থেকে এড়িয়ে চলুন।
জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ক্যালসিয়াম ফাইবার সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা রোগ  প্রতিরোধ এর সহায়তা করে।শরীর সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত জাম খাওয়া প্রয়োজন।

জামের উপকারিতা ও অপকারিতা

জামের উপকারিতা:
জামের উপকারিতা অনেক কালো জামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ক্যালসিয়াম রয়েছে জাম খেলে আমাদের শরীরের রক্তের হিমোগ্লোবিন কে বাড়িয়ে তোলে কালোজাম রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।যারা রক্তশূন্য তাই ভোগেন তাদের জন্য জাম খুব উপকারী।

  • জামে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি।যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কালো জাম খুব উপকারী।
  • জাম খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
  • শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কালোজাম খুব উপকারী।জাম খেলে মুখের গন্ধ হয়না।দাত ভালো রাখে।
  • জাম খেলে ত্বক ভালো থাকে এবং ত্বকের টিস্যু গুলোকে টানটান হতে সহায়তা করে।
  • জাম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • জাম খেলে হাট ভালো রাখতে সাহায্য করে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।
জামের অপকারিতা:

  • জামে অতিরিক্ত চিনি ক্যালরি আপনার সুগারের স্তর বৃদ্ধি করতে পারে পারে।জাম ওজন বৃদ্ধির জন্য হতে পারে।
  • জামে থাকা অতিরিক্ত চিনি আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে।
  • খালি পেটে জাম খেলে বদহজমের সমস্যা হতে পারে।এবং খালি পেটে জাম খেলে মারাত্মক শরীরের ক্ষতি হতে পারে।আবার অনেকের অম্বলের সমস্যাও হয়।

জামের পুষ্টিগুণ

জ্যৈষ্ঠ মাসে বিভিন্ন ধরনের মজাদার ফলে ভরপুর থাকে।আম জাম কাঁঠাল লিচু ইত্যাদি অনেক রকমের ফল পাওয়া যায় রসালো ফলের মধ্যে মজাদার ফল জাম।পছন্দ করে না এমন লোক খুব কম পাওয়া যায় জাম শুধু মজাদার না। জাম খাওয়ার নিয়ম মেনে খেলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো:

  • জামে রয়েছে ভিটামিন ঠান্ডা জনিত জ্বর কাশি টনসিল তারে রোগ প্রতিরোধ করে। জামদাত চুল ত্বক ভালো রাখতে অবদান অপরিসীম।
  • জামে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে অনেক উপকারী।
  • জাম খেলে ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করে। জাম খেলে মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
  • জামে গ্লুকোজ রয়েছে যা মানুষকে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে।
  • জাম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী।
  • পাকা জাম বিট লবণ মাখিয়ে দিয়ে দুই থেকে তিন ঘন্টা রেখে রস বের করে নিন এর রস খেলে মুখের অরুচি বমি বমি ভাব পাতলা পায়খানা দূর হয়।
  • জামে আয়রন ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম রয়েছে যা হাড়ের ক্ষয় হয়ে যাওয়া রোগীদের জন্য উপকারী একটি ফল।
  • জামে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে আয়রন একটি যাদের শরীলে হিমোগ্লোবিন কম তাদের জন্য জাম খুব উপকারী জামে থাকা আয়রন জন্ডিস নিরাময় করে।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে জামে রয়েছে প্রচুর ফাইবার জাম খেলে অনেকক্ষণ পেট ভর্তি থাকবে এর পাশাপাশি রসালো ফল গরমের দিনে খুব উপকারী।
  • পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
  • চর্মরোগ দূর করে থাকে।

জামের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা

জামের বিচির উপকারিতা:

জামে রয়েছে যেমন পুষ্টিগুণ উপকারিতা জামের বিচির উপকারিতা ও কম না জেনে নেওয়া যাক জামের বিচি উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রায় ঘরে ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে আর ডায়াবেটিসের সমস্যা মানে নানা রকম রোগের উৎপত্তি।ডায়বেটিসের রোগীদের ধীরে ধীরে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।তার সাথে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা। তাই আমাদের সুস্থ থাকতে হলে জাম খাওয়ার নিয়ম মেনে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।গরমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা জাম খেতে পারেন।

জাম রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জামের থেকে বীজের উপকারী অনেক। জামের বিচি খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা ঠিক থাকে।জামের বিচিতে থাকা জাম্বলিন রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রতিদিন জাম খেলে রক্তে ইনট্রুলিনের মাত্রা বাড়বে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে জাম খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমবে এবং তার সাথে জামের বিচি শুকিয়ে গুড়া করে প্রতিদিন খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

জামের বিচির অপকারিতা:
জামে রয়েছে ভিটামিন ভিটামিন এ ভিটামিন বিটামিন সি যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জাম জামের বিচি ঝাল এতে কোন অপকারিতা নাই এতে শুধু রয়েছে উপকারি এবং পুষ্টিগুন।

কালো জামের উপকারিতা

কালো জামের উপকারিতা অনেক কালো জামে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ক্যালসিয়াম রয়েছে কালো জাম খেলে আমাদের শরীরের রক্তের হিমোগ্লোবিন কে বাড়িয়ে তোলে কালোজাম রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।যারা রক্তশূন্য তাই ভোগেন তাদের জন্য কালো জাম খুব উপকারী।


  • জামে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি।যাদের রাতে কম দেখার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কালো জাম খুব উপকারী।
  • কালো জাম খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
  • শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কালোজাম খুব উপকারী। কালো জাম খেলে মুখ।
  • কালোজাম খেলে ত্বক ভালো থাকে এবং ত্বকের টিস্যু গুলোকে টানটান হতে সহায়তা করে।
  • কালো জাম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • কালো জাম খেলে হাট ভালো রাখতে সাহায্য করে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।

আরো পড়ুন: ১০ টি মাথাব্যথার কারণসমূহ জেনে নিন

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমি জাম খাওয়ার নিয়ম জামের পুষ্টিগুণ জামের বিচির অপকারিতা উপকারিতা বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম। যদি আমার এই আর্টিকেল পরে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন।বা আপনার কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

আমারে আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার পরিচিতি বন্ধু বান্ধবদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আশা অনলাইন শপ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url