বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স-দাঁত উঠার লক্ষণ জেনে নিন
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ বাচ্চাদের দাতের ব্যথায় করনীয় সম্পর্কে আপনারা সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না আজকে আমার এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের দাঁতের বিষয় বিভিন্ন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
বাচ্চাদের দাঁতে গর্ত হলে করণীয় বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় এবং আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস আমার এই আর্টিকেলে থাকবে এগুলো জানতে হলে আমার আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
বাচ্চাদের দাতের ব্যথায় করনীয়
বাচ্চাদের দাতের ব্যথায় করনীয়? বর্তমান শিশুরা প্রায় দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পায়।দাঁতের ব্যথায় বাছাড়া যখন কষ্ট পায় বাবা মা তখন অনেক বেশি কষ্ট পায় ও দাঁতের ব্যথা ভালো করার জন্য চেষ্টা করে। দাঁতের ব্যথা হলে শিশুরা খাবার খেতে পারে না। বাচ্চারা যখন খেতে পারবে না তখন ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে। শিশুর স্বাস্থ্য বিকাশ ও বুদ্ধি যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি তার দাঁতের স্বাভাবিক গঠন ও খুব গুরুত্বপূর্ণ। দাঁত ভালো রাখতে ক্ষতিকর খাবারের পরিমাণ কমাতে হবে পাশাপাশি এমন খাবার রাখতে হবে যাতে দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- বাচ্চারা পানীয় জাতীয় খাবার খুব পছন্দ করে কিন্তু কোমল পানীয় জাতীয় খাবারের অতিরিক্ত চিনে থাকে এবং এতে কার্বন ডাইঅক্সাইড রয়েছে। এই পানীয় জাতীয় খাবার খেলে বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষতি হয় এইজন্য পানীয় জাতীয় খাবারের বদলে আপনি আপনার শিশুকে দুধ খেতে দিন। তবে বাচ্চারা দুধ খেতে চায় না এইজন্য দুধের সঙ্গে কিছু সুস্বাদু খাবার মিশিয়ে দিন।
- শিশুরা পনির খেতে খুব পছন্দ করে কারণ পনির খুব সুস্বাদু। পনিরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। পনির মুখের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে । ফলে দাঁতের ক্ষয় কমেএবং দাঁতের কাভিটির আশঙ্কা ও কমে যায়।
- বাদাম খেতে খুব সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। বাদাম কাজুবাদাম দাঁতের জন্য খুব উপকারী বাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে এবং বাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। যা দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে। বাদামে প্রচুর পরিমাণে শর্করাও রয়েছে যা বাদাম খাওয়ার পর দাঁতে জীবাণু হতে পারে না। শিশুরা হালকা কিছু খেতে চাইলে বাদাম খাওয়াতে পারেন বাদাম খুব উপকারী বাচ্চাদের জন্য।
- বাচ্চাদের দাঁতে ব্যথা হলে আপনারা হালকা কুসুম গরম পানির সাথে এক টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে মুখে নিয়ে থাকুন এভাবে তিনবার কুলি করলে ব্যথা কমে যায়।
- রসুন দাঁতে লাগালে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। বাচ্চারা যেহেতু রসুন চিবিয়ে খেতে পারবে না এজন্য রসুনের খোয়া ভালো করে থেতলে সামান্য লবণ মিশিয়ে ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স? শিশুদের দাঁত ওঠার সময় কিছু শারীরিক লক্ষণ এবং আচরণ পরিবর্তন দেখা দেয়। এক্ষেত্রে বাবা-মার এসব লক্ষণ গুলো জানা না থাকলে সহজে বুঝতে পারবে না। দাঁত উঠার সময় বাচ্চাদের খেয়াল রাখতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। দাঁত ওঠার সময় শিশুদের খাবার রুচি থাকে না এজন্য প্রত্যেক বাবা-মাকে সচেতন থাকতে হবে।
চলুন জেনে নেই বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ কি কি-
খাওয়ার প্রতি অরুচি: বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় খাবারে অরুচি প্রকাশ করে। ঠিকমতো খায় না কান্নাকাটি করে। মাড়ি ফুলে উঠে যায় ব্যথা জ্বর জ্বর ভাব ও শারীরিক অসুস্থতা থাকার কারণে খেতে চায় না। এজন্য আমাদের উচিত ওই সময়ে শিশুদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো।
খিটখিটে ভাব: শারীরিক অসুস্থতার জন্য শিশুদের আচরণের পরিবর্তন হয়ে থাকে বাচ্চারা ঘুমাতে চায় না কান্নাকাটি করে থাকে।
মাড়ি ফুলে যায়: বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ গুলোর মধ্যে আরও একটি হচ্ছে মাড়ি ফুলে ওঠে। এবং সব সময় বাচ্চারা মারে চাপতে থাকে মাড়ি ফুলে ওঠে এবং ব্যথা হয়।
ডায়রিয়া হয়: বাচ্চাদের যখন দাঁত উঠার সময় হয় সব সময় মাড়ি সুরসুর করে। বাচ্চারা এই সময় যা পায় তাই মুখে দেয় এজন্য অপরিষ্কার কোন কিছু পেটে গেলে ডায়রিয়া হতে পারে।
হালকা জ্বর হয়: দাঁত ওঠার সময় শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এতে চিন্তার কোন কারণ নেই এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স
- বেশিরভাগ বাচ্চাদের চার থেকে সাত মাসের মধ্যেই দাঁত ওঠা দেখা যায়। আবার অনেক বাচ্চাদের এক বছর সময়ও লাগতে পারে।
- বাচ্চাদের দুধ দাঁত ছয় মাস বয়স থেকেই মুখে গজাতে শুরু করে এবং অনেক শিশুদের মাতৃগর্ভে থাকার সময়ও শিশুদের দাঁত ওঠে। শিশুদের একটি একটি করে দাঁত উঠে এবং অনেক সময় অনেকগুলো দাঁত এক সঙ্গে ওঠে। বাচ্চাদের দাঁত সোজা হয়ে না উঠতে পারে এতে টেনশনের কোন কারণ নেই আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।
- শিশুদের দুধ দাঁত মোট ২০টি থাকে। যা তিন বছর বয়সের মধ্যেই দুধ দাঁত উঠে যায়। এবং দাঁত ছয় বছরের মধ্যে পড়তে শুরু করে এবং নতুন দাঁত উঠতে শুরু করে। শিশুদের যদি ১৮ মাস হওয়ার পরেও দাঁত না ওঠে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
বাচ্চাদের দাঁত দেরিতে ওঠে কেন
- যেসব শিশুরা ১০ মাসের আগেই জন্ম হয় এবং ওজন কম থাকে সেসব বাচ্চাদের দাঁত উঠতে দেরি হয়।
- যেসব শিশুদের ভিটামিন ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে সেসব শিশুদের দাঁত দেরিতে ওঠে।
- বাবা মার বা পরিবারের কারো যদি দাঁত দেরিতে ওঠার সমস্যা থাকে তাহলে শিশুদেরও এই সমস্যা হতে পারে এটা চিন্তার কিছু না এজন্য কিছুদিন অপেক্ষা করুন।
- শিশুদের হরমোন জনিত কারণে ও দাঁত দেরিতে ওঠে সে যে শিশুদের শরীরে থাইরয়েডের হরমোনের সমস্যা হলে এ সমস্যা দেখা দেয়।
- মাড়ি ও চোয়ালের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে অনেক সময় দাঁত মাড়ি থেকে বেরোতে সময় লাগে।
বাচ্চাদের দাঁতে গর্ত হলে করণীয়
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স? দাঁতের অনেক সমস্যা বেড়ে যায় খাদ্য কোনা জমে এতে দাঁতের সমস্যা ও দাঁতের ব্যাথা শুরু হয়।দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি হলে দাঁতে ময়লা ও খাদ্যকনা ও জমা হয় দাঁতে ব্যথা করে এবং শির সিঁড়ি অনুভব হয় শিশুদের ক্যাভিটি দাঁতে গর্ত হলে বাচ্চারা আরো বেশি কষ্ট পায়।এজন্য দাঁতে গর্ত হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে চলুন জেনে নেই দাঁতে গর্ত হলে করণীয় কি কি-
- প্রতিদিন ২ বেলা ব্রাশ করতে হবে।
- কফি চিনে যুক্ত খাবার চা এসব খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলুন এবং খাওয়ার পর পরে মুগ ধুয়ে ফেলুন।
- নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা করতে হবে
বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয়
বাচ্চাদের দাঁতে পোকা লাগার বিভিন্ন কারণ হয়ে থাকে। আমরা যাকে দাঁতের পোকা বলে থাকে কিন্তু ডাক্তারের ভাষায় এটা ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁতের ক্ষয় । দাঁতের ক্ষয়ের জন্য এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এর জন্য দায়ী। বাচ্চারা বেশিরভাগ সময় মিষ্টি খাবার চকলেট খেয়ে থাকে এগুলো খাবার বাচ্চাদের দাঁতে পোকা লাগার বিশেষ কারণ। এসব খাওয়ার ফলে দাঁতে এক ধরনের এসিড তৈরি হয় যা থেকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয় যার ফলে পোকা লাগে। এবং খাবার খাওয়ার পরে দাঁতে খাবার গুলো লেগে থাকে যে তা থেকেও ব্যাকটেরিয়া জন্ম হয় সে থেকেও দাঁতের ব্যথা শুরু হয়।
- বাচ্চা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চা খাবার খাওয়ার পরে ব্রাশও তো পেস্ট দিয়ে নিয়মিত ব্রাশ করাতে হবে।
- বাচ্চাদের তাতে পোকারোধ করতে হলে বাচ্চার যখন দাঁত বের হবে তখন থেকেই বাচ্চার দাঁতের যত্ন নিতে হবে। বাচ্চার যখন দাঁত বের হবে তখন তো দাঁতে ব্রাশ করা সম্ভব হবে না এই জন্য পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে লেগে থাকা দুধ মুছে দিতে হবে।
- বাচ্চাদের দাঁত ক্ষয় হলে বুঝতে পারলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে বাচ্চার দাঁত ফিরিয়ে পাবেন এছাড়া দেরি হয়ে গেলে দাঁত উঠিয়ে ফেলতে হবে।
- বাচ্চারা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দাঁতের যত্ন নিতে হবে। একটি তাতে ক্ষয় হতে শুরু করলে শব্দতেই শুরু হয় এজন্য বাচ্চাকে অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার দেওয়া যাবে না।
কোনটির অভাবে শিশুদের দাঁত উঠতে দেরি হয়
কোনটির অভাবে শিশুদের দাঁত উঠতে দেরি হয়? এই বিষয়গুলো আমাদের জানা খুব দুরূদ গুরুত্বপূর্ণ শিশুদের প্রায় ছয় মাস থেকে দাঁত উঠতে শুরু করে একটু দেরিতে উঠলে চিন্তার কোন কারণ নেই। অনেক শিশুদের ভিটামিনের অভাবে দাঁত দেরিতে ওঠে। বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স পার হয়ে গেলে ও দাঁত উঠতে দেরি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক শিশুরা শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকে সে ক্ষেত্রেও দাঁত উঠতে দেরি হয়। কোনটির অভাবে শিশুদের দাঁত দেরিতে উঠে চলুন জেনে নেই-
- যেসব শিশুরা জন্মের পরে ওজন কম থাকে এবং ১০ মাসের আগে বাচ্চার জন্ম হয় সেসব বাচ্চাদের দাঁত উঠতে দেড়ি হয়।
- বাচ্চাদের সকালে রোদে নিয়ে বসতে হবে রোদে ভিটামিন ডি রয়েছে এজন্য বাচ্চাদের সকালের মিষ্টি রোদ শরীরে লাগাতে হবে।
- যে সব পরিবারে বাবা-মায়ের তার দেরিতে ওঠে সেসব বাচ্চাদের ও দাঁত দেরিতে ওঠে এতে ভয়ের কিছু নেই।
- দাঁত দেড়িতে ওঠার জন্য ভিটামিন ডি এর অভাবের জন্য হয়। ভিটামিন ডি দাঁত উঠতে খুব সাহায্য করে।
- বাচ্চাদের ক্যালসিয়ামের অভাবেও দাঁত উঠতে অনেক দেরি হয়।
- যেসব শিশুরা পুষ্টিহীনতায় ভোগে সেসব শিশুদের দাঁত উঠতে দেরি হয়।
আরো পড়ুন: লাল শাকের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আমি আমার এই আর্টিকেলে বাচ্চাদের দাঁত ওঠার বয়স বাচ্চাদের দাঁত উঠার লক্ষণ বাচ্চাদের দাতের ব্যথায় করনীয় বাচ্চাদের দাঁতে পোকা হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম আমার এই আর্টিকেলে। আমার এই আর্টিকেল পড়ে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। শিশুর যখন দাঁত উঠবে তখন থেকেই দাঁতের যত্ন নিতে হবে। দাঁতের যত্ন না নিলে বাচ্চারা অনেক কষ্ট পায় এবং দাঁত নষ্ট হয়ে যায় আস্তে আস্তে। এই জন্য আমাদের বাচ্চাদের অবশ্যই দাঁতের ও যত্ন নেওয়া খুব প্রয়োজন।
আমার এই আর্টিকেল পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে পরিচিত বন্ধু-বান্ধবের সাথে আমার এই আর্টিকেলটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।
আশা অনলাইন শপ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url